বোধ

কি যেন একটা (জানুয়ারী ২০১৭)

সুবহাম দে
  • 0
সকালে ঘুমটা ভাঙতে চাইছিল না। কোনমতে উপুড় হয়ে থাকা মাথাটা একটু উঁচু করলাম। বিছানায় সাদা চাদরটা দলা পাকিয়ে রয়েছে। বালিশ গুলো এলোমেলো ভাবে ছড়ানো। একটু উঁচু হয়ে দেখার চেষ্টা করলাম, না, পিয়ালিকে দেখছি না। ও থাকলে ঘরের এ দশা হত না। মাথাটাও খুব ধরেছে, বোধ হয় কাল রাতে নেশা এখনো পুরোটা কাটেনি। একটু স্নান করলে আশাকরি ঠিক হবে। আজ রবিবার, তাই বিশেষ তাড়া নেই। একটু পরেই না হয় বিছানা ছাড়া যাবে। উঠে বসে জানালার দিকে তাকালাম, অনেক বেলা হয়েছে। একটা সিগার ধরিয়ে নিলাম, যদি মাথাটা একটু ছাড়ে!
কিছু পরে উঠে দরজার কাছে গেলাম। বাইরে একটা দুধের বোতল আর তাজা পেপার পড়ে আছে। দুটোই তুলে নিয়ে পেপারে চোখ বোলাতে বোলাতে ঘরে ঢুকলাম। পিয়ালির আজ ডিউটি আছে। কিন্তু ডিউটিতে যাবার আগে ও এই কাজ গুলো সেরে রেখে যায়। যত দিন যাচ্ছে ওর কাজের প্রতি অবহেলা যেন বাড়ছে, মনে মনে ভাবলাম। হঠাৎ মনে পড়ল, আমার আধা ঘুমের মধ্যে ও কি যেন একটা বলছিল, মনে নেই।
একবার ফোন করে দেখলাম। রিং বেজে বেজে কেটে গেল। আজ ওর জন্মদিন, বলেছিলাম কাজে না যেতে। আর কি করা যাবে, একটা সারপ্রাইজ দেওয়ার চেষ্টা করব রাতের বেলা। ওর ফিরতে ফিরতে ১০ টা বাজবে। হাতে সময় আছে। বিকেলে ভাবা যাবে।
ফ্রিজে গতকালের বাটার চিকেন কিছুটা আছে। একটা ব্রাউন ব্রেড দিয়ে দুপুরের খাওয়া সেরে নিলাম। কাল রাতে আমার ড্রিংসের অভ্যাস নিয়ে ওর সাথে কিছুটা ঝামেলা হয়েছিল। কিন্তু ওর ঐ এক কথা আর ভালো লাগে না। যাকগে সে সব। আমি যে ফোন করলাম, একটা উত্তর তো দেওয়া উচিৎ ছিল।
বিকালে বেরিয়ে কিছুটা কেনাকাটা করলাম। ঘরটা একটু গুছিয়ে নিলাম। মনে পড়ছিল আমার সাথে কাটানো ওর প্রথম জন্মদিনের কথা। দুজনে খুব আনন্দ করেছিলাম।
বেশ রাত হয়েছে, ঘড়িতে তখন ১১ টা। পিয়ালী ফেরেনি। কি হল, কিছুই বুঝতে পারছি না। বেলকনিতে বসে দু পেগ গলায় ঢাললাম। একটা ফোন করলো না , ও। ফোনটা ধরল ও না। এত রাতে অন্য কাউকে বিরক্ত করা যায়না। চিন্তার সাথে একটু রাগ ও হচ্ছিল। বেলকনির ঠান্ডা বাতাস ও বিরক্তিকর ঠেকছিল। সামনের বাড়ি গুলোর আলো একে একে নিভে গেল। ফোনটা একবার হাতে নিলাম। রিং হল, কিন্তু ও তুলল না। রাগে ফোনটা ছুড়ে ফেলে দিলাম। আরো দু পেগ গলায় ঢাললাম।
কখন ঘুমিয়ে পড়েছি, বুঝতে পারিনি। রাত তখন ৩ টে বাজে। বেলকনির চেয়ার ছেড়ে কোন মতে উঠে দাঁড়ালাম। মাটিতে পড়ে যাওয়া ফোনটা তুলে দেখলাম ও ফোন করেছিল কি না। না, ফোন করেনি। শুধু whatsapp এ একটা মেসেজ রয়েছে। খুলে দেখলাম, ও একটা মেসেজ পাঠিয়েছে।
"Sorry, তোমার ফোন তুলতে পারিনি। গতকাল রাতে তুমি যখন ঘুমাচ্ছিলে, তখন একটা ফোন আসে। জানতে পারি বককেশ্বর থেকে ফেরার পথে আমার বাবা , মা এর accident হয়। অবস্হা খুব খারাপ ছিল। তোমাকে বহুবার ডাকার চেষ্টা করি। কিন্তু তুমি উঠতে পারলে না। আজ সারাদিন আমি খুব ব্যস্ত ছিলাম। sorry, তোমাকে কিছু জানাতে পারেনি।"
নিজেকে খুব অপরাধী মনে হল। ঘুম আসছে না। টেবিলের উপর আধা শেষ করা পেয়ালাটা তখনো পড়ে আছে। আর একটা সিগার ধরিয়ে পেয়ালাটা তুলে নিয়ে চুমুক দিয়ে পিয়ালির উদ্দেশ্যে বললাম, .... Sorry।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
কাজী জাহাঙ্গীর এই সরি’টা সাময়িক, জীবনসাথী’র ভালবাসায় পছন্দের মূল্যটাই বেশী হওয়া উচিত। নায়কটাকে আরো বেশী করে খল করে ‍দিতে পারতেন। কত দুর্ভাগা মেয়েটা। আপনার জন্য শুভকামনা আর আমার পাতায় আমন্ত্রণ।

৩০ নভেম্বর - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪